Fragrance Knowladge

আতরের ভেজাল কিভাবে হয় !

আতরের ভেজাল কিভাবে হয় !

একটা গল্প দিয়ে শুরু করি, আবু জাহিল নামক এক ব্যক্তি এসে তর্ক জুড়ে দিল আপনারা দাম বেশি রাখেন, ৩ মিলি আতর ২০ টাকার বেশি হয় না, এভেইলেভেল বাজারে পাওয়া যায়।এই আবু জাহিল কেন কনফিউজড, কারন তার এই ইন্ডাস্ট্রির কোনো জ্ঞান আছে বলে মনে হয় না।

এই আর্টিকেল লেখায় হেল্প নিয়েছি বাংলাদেশের একমাত্র সার্টিফাইড পারফিউমার Murtofa Salekin ভাইয়ের এবং Khandaker Hasif Ahmed Rahat ভাইয়ের, তিনিও কেমেস্ট্রি গ্রাজুয়েট এবং আতর শিল্পে উনার অবদান অসামান্য, আলহামদুলিল্লাহ।

আতর /সিপিও (Concentrated Perfume Oil) এর গঠনে ৩ টা পার্ট থাকে:

১/ এরোমা কম্পাউন্ডস/ Odorous Substances

২/ ক্যারিয়াল ওয়েল/ Vehicles

৩/ ফিক্সেটিভ

সিন্থেটিক, সেমি সিন্থেটিক, সেমি ন্যাচারাল আতর আমার জানা মতে বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়না কারন এরকম ল্যাব সেট আপ নেই। সেই জন্য বিদেশ থেকেই আতর/সিপিও তৈরি হয়ে ইমপোর্ট হয়ে দেশে আসে। কিছু এরোমা সরাসরি স্কিনে ইউজেবল নয় বিধায় ডাইলুটেন্ট ইউজ করে ত্বকের উপযোগী করেই বিভিন্ন ব্রান্ড বোতলজাত করে। এবং এরোমা কম্পাউন্ডগুলোরও গ্রেড আছে।

উল্লেখ্যযোগ্য ৩ টা গ্রেড হল:

১/ কসমেটিক গ্রেড, যা বিভিন্ন প্রসাধনীতে ইউজ হয়

২/ ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল গ্রেড, যা বিভিন্ন ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল প্রোডাক্ট তৈরি ব্যবহৃত হয়, যেমন- মেডিসিন।

৩/ ফাইন ফ্রাগরেন্স বা প্রিমিয়াম গ্রেড, এটাই মূলত ভাল সুগন্ধি ব্রান্ড সরবরাহ করে থাকে, যা কোয়লিটিফুল এরোমা।

এখন বাজারে কসমেটিক গ্রেড বা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল গ্রেডের চিপ এরোমাও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপার হল ১ কেজি নিন্ম মানের আতর কিনে তাতে ভেজাল করে ৫ কেজি/ তার বেশি বানানো হয়।

ভেজাল হিসেবে ইউজ হয় মূলত ডাই ইথাইল থ্যালেট (DET), ডাই প্রোপিলিন গ্রাইকল (DPG)। এমনকি মিথানল, ইথানলের মত এলকোহল ইউজ করে পাতলা করা হয়, যাতে স্বাস্থ্য ঝুকি মারাত্বক।এগুলো অহরহ মার্কেটে হয়, যার চাক্ষুষ প্রমাণ আছে।

ভেজাল আতর ব্যবহারে ক্ষতি কি?

এগুলো স্কিনে এপ্লাই করলে স্কিন ইরিটেশন থেকে শুরু করে এলার্জি, এমনকি স্কিন ক্যান্সারও হতে পারে, এবং ঘ্রাণ নাকের মাধ্যমে ফুসফুসে যেয়ে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে, স্কিন থেকে আতর এবজর্ভ হয়ে ব্লাডের মাধ্যমে লিভারে প্রসেস হয়, এতে করে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। এর মধ্য থাকা মিথানল কিন্তু ধীরে ধীরে চোখ নষ্ট করে দিতে পারে!!

অতএব, যে ভাইয়েরা ভেজাল করেন, তাদের জন্য হিদায়াতের দুয়া রইল। আর যারা মনে করেন আতর তো আমরা খাই না, তাদের জন্য একরাশ সমবেদনা রইল।