সুগন্ধি প্রেমীদের আতরের লাস্টিং নিয়ে অনেক পেইন থাকে, এই পোস্টে আতরের লাস্টিং এর মেজর ফ্যাক্টরগুলো নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ, যাতে আপনার ভুল ভাবনা গুলো দূর হয়, এবং বেটার কিছু এক্সপেরিয়েন্স করতে পারেন ইনশাআল্লাহ।
একটা কমন প্রশ্ন আমরা পেয়ে থাকি, (বাহিরের দেশের “কাপড় না ধুয়া পর্যন্ত ঘ্রাণ যাইতে চায়না” আতরগুলো বাংলাদেশে এসে কম লাস্টিং দেখায় কেন?)
আতরের কোয়ালিটি, এপ্লাই করার পদ্ধতি সব কিছুই ঠিক আছে, কিন্তু এরাবিয়ান কোনো আতর আরব দেশে যেরকম স্থায়ীত্ব (লাস্টিং) পাওয়া যায়, আমাদের দেশে সেরকম পাওয়া যায় না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে হিউমিডিটি বা বাতাসের আর্দ্রতা।
আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মরুভূমিপ্রবণ হওয়ায় সেখানে তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকলেও বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে৷ বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম থাকায় মানুষগুলোর ত্বক থেকেও পানি টেনে নেয় সে, এইজন্য ওই দেশের মানুষ তেমন ঘামে না। না ঘামার কারনে আতরের ভাল লাস্টিং পাওয়া যায়।
এদিক থেকে বাংলাদেশের চিত্র আবার ভিন্ন। তাপমাত্রা বেশি, কিন্তু এই অঞ্চলে জলাধার-ও কিন্তু বেশি! পানির উৎসের আধিক্যের কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ তূলনামূলক বেশি হয়, এর ফলে বায়ু আপনার ত্বক থেকে আর তেমন পানি শোষণ করে না, ফলে অধিক ঘামি আমরা। বেশি ঘামের কারণে স্প্রে করা পারফিউম / মাখা আতর সহজেই ধুয়ে যায়, আবার ঘেমে যাওয়া শরীর খপ করে ধরে দুষিত বাতাসের নানান কণা-কে, তাদের সাথে সুবাসঅণুর রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সহজেই ঘ্রাণ হেরে যায়। ফলে লাস্টিং কম পাই অন্যদেশের চাইতে।
পারফিউম টাইপ আতরগুলো শীতপ্রধান দেশের কথা মাথায় রেখে বানানো। সেগুলার আকার হয় ছোট ছোট। আমাদের দেশে গরম ত কড়া গরম, শীতেও খুব একটা তাপমাত্রা নামেনা (ইউরোপ-আমেরিকার সাথে তুলনা করি যদি)। তাই অধিক তাপমাত্রার জন্য হালকা-পুলকা মলিকিউলগুলো খুব তাড়াতাড়ি বয়েলিং পয়েন্ট ধরে ফেলে সহজেই উড়ে যায়। পারফিউম টাইপ আতর গুলোর কম লাস্ট করার এটাই মূল কারণ। এই একই কারণে টপ নোটস এর উপাদান গুলোও দ্রুত ৫-২০ মিনিটের মধ্যেই উধাও হয়ে যায়।
ভিন্ন দেশের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে ডিজাইন করা আতর/পারফিউম আমাদের দেশে লাস্টিং কম করবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা যেমন ইউনিক, আমাদের আবহাওয়াটাও কম ইউনিক না!